মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ১১:০৮ অপরাহ্ন

কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসা মাছগুলো বোট থেকে ফেলা হয়েছে

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতে ভেসে আসা মরা মাছগুলো জাহাজ থেকে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম খালেকুজ্জামান বিপ্লব। তিনি জানান, ভেসে আসা সবগুলোই চামিলা প্রজাতির মাছ।যা স্থানীয়দের কাছে ‘গরু’ মাছ নামে পরিচিত।

খালেকুজ্জামান বিপ্লব আরও বলেন, শনিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে ও রাতে কলাতলী সৈকতে কিছু মরা মাছ ভেসে আসার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। কিন্তু তাৎক্ষণিক সৈকতে কোনো মাছ দেখা যায়নি। পরে জানতে পেরেছি মাছগুলো স্থানীয় লোকজন কুড়িয়ে নিয়ে গেছে।

পরে স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, জাহাজ থেকে এই মাছগুলো ফেলে দেয়া হয়েছে। মরা মাছগুলোর প্রায় সবগুলোই চামিলা প্রজাতির মাছ। যা স্থানীয়দের কাছে ‘গরু’ মাছ নামে পরিচিত।

তিনি জানান, এ মাছ উপকূলেই থাকে, গভীর সাগরে থাকে না। তাই গভীর সাগরে ট্রলার থেকে সেটা নিক্ষেপ করা সম্ভব নয়। আমরা ধারণা করছি, উপকূলীয় এলাকায় টানা জালের কোনো বোট বেশি মাছ পাওয়ায় কমদামি মাছগুলো সমুদ্রেই ফেলে দিয়েছে, আর সেগুলো জোয়ারের সময় সৈকতে ভেসে এসেছে।

বিষয়টি আরও নিশ্চিত করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, মহেশখালী এলাকার টানাজালের একটি বোটে ব্যাপক পরিমাণ ‘গরু’ মাছ ধরা পড়ার পর বোটে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সেই বোটের মাঝিমাল্লারা কিছু মাছ বিনামূল্যে অপর দুটি বোটের জেলেদের দিয়ে দেয়। মাছগুলো ছোট এবং সস্তা হওয়ায় আর কেউ নিতে রাজি না হলে সেগুলো সাগরে ফেলে চলে যায় ওই বোটের মাঝিমাল্লারা। এই ধরনের ঘটনা সাগরে মাঝে মধ্যেই ঘটে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, কক্সবাজার সৈকতে হঠাৎ করে হাজার হাজার মরা মাছ ভেসে আসার খবর পেয়ে আমাদের বিজ্ঞানীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করে। তারা কলাতলী থেকে নাজিরারটেক পর্যন্ত সমুদ্র উপকূল থেকে পানির নমুনাও সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু পানির গুণাগুণে কোনো অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়নি।

তিনি বলেন, ভেসে আসা মাছের মধ্যে ২/৩ প্রজাতির ছোট ছোট মাছ দেখা গেলেও বেশিরভাগই ছিল চামিলা জাতের ‘গরু’ মাছ। এরা দলবদ্ধভাবে চলাচল করে এবং এভাবেই বড় হয় বলে এদের ‘স্কুল অব ফিশ’ বলা হয়। হয়তো ঝাঁকে ঝাঁকে বিচরণের সময় একটি ‘স্কুল’ বা বড় দল আটকা পড়ে জেলেদের জালে। ফলে বোটের অতিরিক্ত মাছগুলো তারা সাগরেই ফেলে দেয়। আর এই ধরনের ঘটনা সাগরে হরহামেশাই ঘটে, যা আমাদের নজরে আসেনা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com